চোখের সামনে বিস্তৃত এক জলরাশি। তারই মাঝে চোখের পলকে হঠাত্‍ই ভেসে উঠলো একটি বড় মন্দির। এমন দৃশ্য কল্পনা করতে যেন গায়ে কাটা দেয়! সত্যিই এমন এক অলৌকিক দৃশ্যের দেখা মেলে আরব সাগরে।

বলছি, এক শিব মন্দিরের কথা। দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য সমূদ্রে ভেসে ওঠে মন্দিরটি। আবার একসময় জলেও অদৃশ্য হয়ে যায়। মন্দিরটির নাম স্তম্ভেশ্বর মহাদেব মন্দির। এই মন্দিরটি গুজরাট রাজ্যের ভোদোদরা শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে কাবি কাম্বোই গ্রামে অবস্থিত।

আরো পড়ুন: মহাদেব সম্পর্কে এই ৫ তথ্য না জানা থাকলে জেনে নিন

 

এই মন্দিরটির বয়স প্রায় দেড়শ বছর। এটি আরব সাগরের খাম্বট উপসাগরের তীরে অবস্থিত।সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক পীঠস্থান ভারতে অনেকসময়ই এমন ঘটনা ঘটে তা সত্যিই বিস্ময় জাগায়।তেমনি আরব সাগরের এক রহস্যময় শিব মন্দির, যা প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার জন্য ভেসে ওঠে সমুদ্রের মাঝে। শিব ঠাকুরকে সৃষ্টিকর্তাও বলা হয়ে থাকে। সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহে তিনি পরমসত্ত্বা রূপেও ঘোষিত। শিব সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয় রূপ তা পরমেশ্বর- এর প্রণাম মন্ত্রেই বার বার উঠে আসে।

শিব মূর্তির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল তার তৃতীয় নয়ন, গলায় বাসুকী নাগ, জটায় অর্ধচন্দ্র, জটার উপর থেকে প্রবাহিত গঙ্গা, অস্ত্র ত্রিশূল ও বাদ্য ডমরু। শিবকে সাধারণত ‘শিবলিঙ্গ’ নামক বিমূর্ত প্রতীকে পুজো করা হয়। সমগ্র হিন্দু সমাজে শিব পুজোর প্রচলন লক্ষ করা যায়। ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা,বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কিছু অংশেও শিব পুজোর ব্যাপক প্রচলন লক্ষিত হয়। সনাতন ধর্মীয় শাস্ত্রসমূহে শিব পুজোকে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক ফলপ্রদ বলে বর্ণনা করা হয়।

তবে অবাক হবেন এমনই এক শিব মন্দির রয়েছে যা এই কলিযুগেও রহস্যময়। এই মন্দির গুজরাটের ভব নগরের আরব সাগরের নীচে অবস্থিত যা সমুদ্রতীর থেকে প্রায় ১.৫ কিলোমিটার গভীরে রয়েছে। এই মন্দির নিষ্কলঙ্কেশ্বর শিব মন্দির নামে পরিচিত। তবে যে কোনও সময় গেলে দেখা পাবেন না এই মন্দির।

বিশেষ সময় ছাড়া দর্শনার্থীরা গেলে সেখানে সমুদ্রের জলরাশি ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবেন না। শুধু দেখা যায় মন্দিরের চূড়ার পতাকা । দুপুর ১ টা থেকে রাত ১০টা অবধি দেখা মেলে এই মন্দিরের। মনোষ্কামনা পূরণের আশায় এই মন্দিরে ভিড় জমান বহু পুণ্যার্থী।

এই মন্দিরের উচ্চতা ২০ ফুট। জানা যায় এই মন্দির নির্মান করেছিলেন পঞ্চপাণ্ডবেরা। নিজেদের পাপ মোচন করার উদ্দেশ্যেই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন তারা ।জয় বাবা ভোলানাথের জয়।